করোনাভাইরাস: নিষেধাজ্ঞায় স্থবির বাংলাদেশের জনজীবন

নভেল করোনাভাইরাসের ছোবলে সারাবিশ্ব যখন কাঁপছিল, তখনও বাংলাদেশের জনজীবন ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু মাত্র ২০ দিনেই পাল্টে গেছে চিত্র। স্তব্ধ জীবনে এখন নানা শঙ্কা আর অস্বস্তি।বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ এই দেশে অতি সংক্রামক এই ব্যাধি বাংলাদেশে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়লে কী পরিণতি ঘটবে- তা নিয়ে সবার মধ্যে রয়েছে উদ্বেগ-আতঙ্ক।জনসমাগমে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি বাড়ে বলে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা এসেছিল আগেই।আক্রান্তের সংখ্যা ত্রিশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর গত সোমবার সরকার ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের সব অফিস-আদালতে ছুটি ঘোষণা করে। যোগাযোগ ব্যবস্থা, ব্যবসা-বাণিজ্যও প্রায় বন্ধ।

Army in Bangladesh street

Army in Bangladesh street Source: Supplied

Empty road in Dhaka
Source: SBS Bangla(Ali Habib Dhaka)
কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে কার্যত অবরুদ্ধ রাজধানী ঢাকার বাসিন্দাদের জীবন-যাপন বদলে যাচ্ছে। পরিবর্তন এসেছে প্রাত্যহিক কাজেও।অনেকেই ঘরে বসে কাজ করার পদ্ধতিতে খুশিও হতে পারছেন না। নিত্যপণ্যের বাজারের জন্য অনেকে ঝুঁকেছেন অনলাইন শপের দিকে।

হোম কোয়ারেন্টিনে খালেদা জিয়া

নভেল করোনাভাইরাসের সংকটের মধ্যে প্রায় আড়াই বছর পর কারামুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে না পারলেও মুক্ত জীবনে খালেদা জিয়া স্বস্তিতে আছেন বলে তার একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানিয়েছেন। খালেদার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে শাশুড়ির চিকিৎসা কার্যক্রম তদারক করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দলের ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমের সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমকে এসব এ তথ্য জানান। গত বুধবার বিকালে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় আসেন খালেদা জিয়া। বাসায় আসার পর ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে দেখে চিকিৎসা শুরু করেন।

৭৫ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন। নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে ‘ফিরোজা’র দোতলায় ১৫ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে নার্সসহ সেবাদাতা কয়েকজনও সেখান থেকে বেরোচ্ছেন না।ওই ভবনে এখন খালেদার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও নিকট আত্মীয়- স্বজন ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার নেই। নিরাপত্তাকর্মীরা সব সময়ে ফটক আটকে পাহারা দিচ্ছেন। 

নাগরিকদের বাংলাদেশ ছাড়তে বলেছে মার্কিন দূতাবাস ও ব্রিটিশ হাই কমিশন

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে ব্রিটিশ নাগরিকদের বাংলাদেশ ছাড়তে বলেছে ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাই কমিশন। শুক্রবার দুপুরে হাই কমিশনের ফেইসবুক পাতায় এক বার্তায় বলা হয়, “বাংলাদেশে অবস্থানরত ব্রিটিশ নাগরিকদের উদ্দেশে বলছি: ঢাকা থেকে লন্ডন ও ম্যানচেস্টারের বিমান ফ্লাইট এখনো সচল আছে। আমরা আপনাকে যুক্তরাজ্যে ফিরে যাওয়ার উপদেশ দিচ্ছি।” এদিকে বাংলাদেশে থাকা নাগরিকদের বিশেষ ফ্লাইটে দেশে ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। দেশে ফিরতে ইচ্ছুক আমেরিকানদের তথ্য চেয়ে বৃহস্পতিবার দূতাবাসের ওয়েবসাইটে এক বার্তায় বলা হয়, ”আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ফিরতে ইচ্ছুক মার্কিন নাগরিক ও পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি ফ্লাইটের ব্যবস্থার করতে কাজ করছে দূতাবাস।“তবে এখন পর্যন্ত সেই ফ্লাইটের দিন-ক্ষণ ঠিক হয়নি বলে ওই বার্তায় জানানো হয়েছে।

বন্ধ হলো সব রুট, লন্ডন-ম্যানচেস্টার ফ্লাইটও স্থগিত করল বিমা

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারন করায় একের পর এক আন্তর্জাতিক গন্তব্যে উড়ান বন্ধ হয়ে যায়। দেশের জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাটির ১৭টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যের মধ্যে ১৫টিই বন্ধ হয়ে গেলেও টিকে ছিল শুধু লন্ড ও ম্যানচেষ্টার ফ্লাইট। অবশেষে সেই দুটি ফ্লাইটও এক সপ্তাহের জন্য স্থগিতের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ব বিমান সংস্থাটির সব রুট আপাতত বন্ধ হয়ে গেল। আগামী ৩০ মার্চ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।


Share
Published 28 March 2020 7:44am
By Ali Habib
Presented by Abu Arefin

Share this with family and friends