ভারতে গ্রেপ্তার ৯ আল কায়দা জঙ্গি

পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরালার একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ৯ জন আল কায়দা জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছেন জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা বা এনআইএ-র আধিকারিকরা। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে ৬ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।

9 Al Qaeda militants arrested in India (Image representational)

9 Al Qaeda militants arrested in India (File image) (AAP) Source: EPA

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত ৬ জন হল নাজমুস সাকিব, আবু সুফিয়ান, মইনুল মণ্ডল, লিউ ইয়ান আহমেদ আলমামুন কামাল ও আতিউর রহমান। 

আর কেরলের এর্নাকুলাম থেকে ধৃত তিন জন হল মুরশিদ হাসান, ইয়াকুব বিশ্বাস ও মোশারফ হোসেন।ধৃতদের কেরল ও পশ্চিমবঙ্গের আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জেরা করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।

এদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণে ডিজিটাল ডিভাইস, তথ্য, জিহাদি পত্রিকা, ধারালো অস্ত্র, দেশী বন্দুক, স্থানীয় ভাবে তৈরি একটি বুলেটপ্র‌ুফ জ্যাকেট এবং বিস্ফোরক বানানোর পদ্ধতি নিয়ে লেখা একাধিক বই পাওয়া গিয়েছে। 

এরা আর কার কার সঙ্গে যুক্ত তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।গোটা দেশে আর কোথায় কোথায় এই চক্রের জাল আছে তা তদন্ত করে দেখছেন গোয়েন্দারা।

দু’দিন আগেই সংসদে দাঁড়িয়ে দক্ষিণের রাজ্যগুলির পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়ে ছিলেন কেন্দ্রীয়মন্ত্রী। তারপরই ৯ জন আল কায়দা জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে এন আই এ।

ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র থেকে পরিযায়ী শ্রমিক,কী ভাবে জঙ্গিদের এই মডিউলে প্রশ্নের উত্তরে বলা হচ্ছে ,পরিযায়ী শ্রমিকদের ভিড়েই নিজেদের আড়াল করে কেরল থেকে বাংলা পর্যন্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করেছিল এই মডিউল। 

কেরলে যাঁরা গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরাও পরিযায়ী শ্রমিক। আর নাজমুসের ক্ষেত্রে গোয়েন্দাদের দাবি, অনলাইনে তাঁর মগজধোলাই করে দলে টানা হয়েছিল। অনলাইনে পড়ানো হয়েছিল জিহাদি পত্রপত্রিকা। উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল আল কায়দায় নাম লেখাতে।

মুর্শিদাবাদ থেকে ধৃত সন্দেহভাজন আল কায়দা জঙ্গি লিউ ইয়ান আহমেদ।তিনি পেশায় ইলেকট্রিক মেকানিক। স্থানীয় একটি বেসরকারি কলেজে চুক্তিভিত্তিক ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করতেন। গোয়েন্দাদের দাবি, এরা প্রত্যেকেই পূর্ব পরিচিত। 

অনলাইনে তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তাঁদের মডিউলকে নির্দেশ দেওয়া হত পাকিস্তান থেকে। ধৃতদের মোবাইল থেকে একাধিক জিহাদি চ্যাট গ্রুপে যুক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি গোয়েন্দাদের।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে শনিবার সকালে কেরলের এর্নাকুলাম ও পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ১১টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালান এনআইএর তদন্তকারীরা। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৬ জন ও কেরল থেকে তিন জন আল কায়দা জঙ্গি গ্রেপ্তার হয়েছে। 

ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, নয়াদিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অতর্কিতে লোন উলফ্ হামলা চালানোর ছক কষছিল জঙ্গিরা। কিন্তু, তার আগেই তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

ধৃতদের গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে বোমা তৈরির উপাদান, দেশীয় পিস্তল, ধারালো অস্ত্র, ডিজিটাল ডিভাইস, জেহাদি কাগজপত্র-সহ অনেক জিনিস উদ্ধার হয়েছে। 

তাদের জেরা করে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, পাকিস্তানে আশ্রয় নেওয়া আল কায়দা জঙ্গিদের সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল ধৃতদের।

তারপর তাদের বক্তব্য অনুপ্রাণিত হয়ে নয়াদিল্লি-সহ ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় একাকী হামলার ছক কষছিল তারা।এর জন্য টাকা সংগ্রহ করার পাশাপাশি ধৃতদের মধ্যে কেউ কেউ দিল্লি গিয়ে অস্ত্র জোগাড়ের পরিকল্পনাও করেছিল।কিন্তু, তার আগেই ওই জঙ্গিদের গ্রেপ্তার করার ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নাশকতার ঘটনা আটকানো গেল।

এই ঘটনার পরই ফের পরপর তিনটি টুইট করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।মূলত রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।রাজ্য দিন দিন বোমা তৈরির আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে বলেই টুইটে তোপ দাগেন ধনকড়।রাজ্যের পুলিশকর্মীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে ছাড়েননি তিনি।

আরও পড়ুনঃ 



 

Share
Published 19 September 2020 9:58pm
Updated 19 September 2020 10:08pm
By Partha Mukhopadhyay
Presented by Shahan Alam

Share this with family and friends