বাংলাদেশের 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯'-এ সেরা গায়কের পুরস্কার পেলেন মৃনাল কান্তি দাস

মেলবোর্নের বাসিন্দা শিল্পী মৃনাল কান্তি দাস বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯-এর আসরে শ্রেষ্ঠ গায়কের পুরস্কার পেয়েছেন। 'শাটল ট্রেন' চলচ্চিত্রে 'তুমি চাইয়া দেখো' গানটি গেয়ে তিনি এই পুরস্কার পেলেন।

Mrinal Kanty Das wins Best Singer Award in National Film Award in Bangladesh

Mrinal Kanty Das wins Best Singer Award in National Film Award in Bangladesh Source: Mrinal Kanty Das


হাইলাইটস 

  • মৃণাল 'শাটল ট্রেন' চলচ্চিত্রে 'তুমি চাইয়া দেখো' গানটি গেয়ে বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেলেন। 

  • তিনি একাধারে চিত্রশিল্পী (পেইন্টার), ফটোগ্রাফার, গায়ক, গীতিকার, সুরকার এবং গ্রাফিক ডিজাইনার। 

  • ভিক্টোরিয়ার মাল্টিকালচারাল কমিউনিটির শিশুদের ছবি আঁকা শেখান। 

 

গত সপ্তাহে বাংলাদেশের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় 'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯' ঘোষণা করে। এতে শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন মৃনাল কান্তি দাস। 

প্রদীপ ঘোষ পরিচালিত 'শাটল ট্রেন' ছবিতে 'তুমি চাইয়া দেখো' গানটি গেয়ে তিনি এই পুরস্কার পেলেন। এই গানের কথা ও সুর তিনি নিজেই করেছেন, সংগীত পরিচালনা করেছেন বিনোদ রায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন আমাদের জন্য খুবই আবেগের একটি বিষয়, এই শাটল ট্রেন ব্যবহার করতে গিয়ে পুরো জার্নির সময়ে অনেক অনেক গান গেয়েছি, আর এভাবে অনেক গানে কথা-সুর দিয়ে গান গাইতে গাইতেই গানের মধ্যে জড়িয়ে গেছি।
চলচ্চিত্রটি সম্পর্কে মৃনাল দাস এসবিএস বাংলাকে বলেন, ''চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে কেন্দ্র করে গণঅর্থায়নে এই সিনেমাটি নির্মিত হয়েছে। সেখানে আমারই লেখা ও সুরে দুটি গানে আমি কণ্ঠ দেই। অপর গানটি হচ্ছে ‘রঙ্গিলা হাওয়া লাইগাছে’; চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেন আমাদের জন্য খুবই আবেগের একটি বিষয়, এই শাটল ট্রেন ব্যবহার করতে গিয়ে পুরো জার্নির সময়ে অনেক অনেক গান গেয়েছি, আর এভাবে অনেক গানে কথা-সুর দিয়ে গান গাইতে গাইতেই গানের মধ্যে জড়িয়ে গেছি।”
Mrinal Kanty Das wins Best Singer Award in National Film Award in Bangladesh
Mrinal Kanty Das wins Best Singer Award in National Film Award in Bangladesh Source: Mrinal Kanty Das
“এই সিনেমার নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ সেই বিষয়টি মনে রেখেই আমাকে দুটো গান দেওয়ার অনুরোধ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতি-আবেগের কথা মনে করে এই প্রস্তাবে রাজী হয়ে যাই। মেলবোর্নে আমাদের ছোট একটা স্টুডিওতে গান দুটো কম্পোজ করে পাঠিয়ে দেই সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক বিনোদ রায়কে। আর এভাবেই আমি এই সিনেমার সাথে যুক্ত হলাম।”
সত্যিকার অর্থে সিনেমা নির্মাণ, অর্থায়ন পুরো যে প্রক্রিয়া তার জন্য নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ এবং কলাকুশলীরা অনেক শ্রম দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক এমন উদ্যোগ এবং এর বাস্তবায়ন প্রশংসার দাবি রাখে।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মত সম্মানজনক অর্জন সম্পর্কে তিনি বলেন, “চলচ্চিত্র নিয়ে দর্শক নানা আলোচনা করে থাকেন, মতামত ব্যক্ত করেন - এগুলো নির্মাতাদের অনেক অনুপ্রেরণা দেয়, তবে সব কিছুর উর্দ্ধে থাকে এর থেকে প্রাপ্ত যে কোন অর্জন। এই সিনেমায় কণ্ঠ দিয়ে সেরা গায়কের যে পুরস্কার পেলাম তা আমাকে আরো অনুপ্রাণিত করবে। এই পুরস্কারের ফলে মনে হচ্ছে আমার দায়িত্ব যেন আরও বেড়ে গেলো।’’

“সত্যিকার অর্থে সিনেমা নির্মাণ, অর্থায়ন পুরো যে প্রক্রিয়া তার জন্য নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ এবং কলাকুশলীরা অনেক শ্রম দিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক এমন উদ্যোগ এবং এর বাস্তবায়ন প্রশংসার দাবি রাখে। আমি তো শুধু গান গেয়েছি, তাই এই পুরস্কার আমি সিনেমার জড়িত সকলের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।” 

মৃনাল দাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি ২০১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী হন এবং মেলবোর্নে থিতু হন। 

চিত্রশিল্পী হিসেবে মৃণালের দুটো একক চিত্র প্রদর্শনী হয় মেলবোর্নে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া জুড়ে প্রায় পঁচিশটির মত গ্রুপ এক্সিবিশনে অংশ নিয়েছেন তিনি।  

তিনি 'কালার বাড্স' নামে একটি সোশ্যাল প্লাটফর্ম গড়ে তুলেছেন যেখানে অভিবাসী পরিবারের শিশুদের পেইন্টিং এবং ড্রয়িং প্রশিক্ষণ দেন। এছাড়াও তিনি ভিক্টোরিয়ান বাংলাদেশি কমিউনিটি ফাউন্ডেশন এবং সুদানীজ কমিউনিটি দ্বারা পরিচালিত এন ইউ ই আর কমিউনিটি ফাউন্ডেশনে চিত্রকলা শিক্ষক হিসেবেও কাজ করছেন। 

চিত্রকলা ছাড়াও মৃনাল লোকসংগীত নিয়েও কাজ করছেন। তিনি যৌথভাবে 'বাউলা বাংলাদেশ' নামে একটি লোকগানের ব্যান্ড গড়ে তুলেছেন। 

তিনি এসবিএস বাংলাকে জানান ভবিষ্যতে ভিক্টোরিয়ার বহুভাষিক কমিউনিটির জন্য তার কাজ করার ইচ্ছা আছে। একজন শিল্পী হিসেবে তিনি অভিবাসী শিশু, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু এবং প্রবীণ নাগরিকদের আর্ট স্কীল বাড়াতে সাহায্য করতে চান।  

"এতে করে তাদের মধ্যে ট্রমা, হতাশাসহ কিছু মানসিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে, এবং এভাবে তারা বৃহত্তর সমাজে অবদান রাখতে সমর্থ হবে।" 

মৃনাল তার অনলাইন প্লাটফর্ম 'কালার বাড্স'-এর মাধ্যমে শিশুদের জন্য অনলাইন আর্ট গ্যালারি তৈরীর প্রত্যাশা করছেন।

আরও দেখুনঃ


 


Share
Published 11 December 2020 2:32pm
Updated 11 December 2020 2:40pm
By Shahan Alam
Presented by Shahan Alam

Share this with family and friends