বিশ্বব্যাপী মহামারীর প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার ২০২১ সালের আদমশুমারির তাৎপর্য

Ruvindri Gunawardena

Ruvindri Gunawardena was able to come to Australia before the borders closed. Source: SBS News

বৈশ্বিক মহামারীর কবলে পড়েছে অন্যান্য দেশের মত অস্ট্রেলিয়াও; সেই বিবেচনায় এবারের আদমশুমারি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া তার জনসংখ্যা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের একটি চিত্র পাবে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় বহু বছর পর সর্বনিম্ন অভিবাসনের ঘটনা ঘটছে, তাই ফলাফলগুলি সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে আশা করা হচ্ছে।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • গত বছরের মার্চে সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর থেকে অভিবাসনের অভাবে দক্ষ কর্মীদের দীর্ঘস্থায়ী অভাব দেখা দিয়েছে
  • অস্ট্রেলিয়ায় এই বছরে নেট ওভারসীজ মাইগ্রেশন হবে লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭২,০০০ কম
  • এই বছরের আদমশুমারি থেকে সংগৃহীত ফলাফল অভিবাসনের ধরন পরিবর্তন এবং বর্তমান জনসংখ্যার একটি চিত্র পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে

বৈশ্বিক মহামারীর কবলে পড়েছে অন্যান্য দেশের মত অস্ট্রেলিয়াও; সেই বিবেচনায় এবারের আদমশুমারি বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, এর মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়া তার জনসংখ্যা এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের একটি চিত্র পাবে। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ায় বহু বছর পর সর্বনিম্ন অভিবাসনের ঘটনা ঘটছে, তাই ফলাফলগুলি সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে আশা করা হচ্ছে।

রুবিন্দ্রী গুণওয়ার্দেনা ছোটবেলা থেকেই জানতেন যে তিনি একদিন অস্ট্রেলিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন।

তিনি বলেন, "যখন আমি নবম-দশম গ্রেডে পড়তাম, তখন আমি সবসময় বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রত্যাশা করতাম, আমি ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়ান শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অনেক ভালো কথা শুনেছি। "

আই-টি'র এই শিক্ষার্থী প্যারামাটার ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন এবং সীমান্ত বন্ধ হওয়ার ঠিক আগে ২০২০ সালের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ায় আসেন।

কিন্তু তার অনেক বন্ধু, যাদের সাথে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় একসাথে পড়াশোনা করার পরিকল্পনা করেছিলেন, তার নিজ দেশ শ্রীলঙ্কায় এখনো রয়ে গেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থার ভঙ্গুর অবস্থার বিষয়টি খুব সাধারণ হয়ে উঠেছে, কারণ মহামারী-জনিত সংকটে এখন সীমান্ত বন্ধ।

আতিথেয়তা খাতও চাপের মধ্যে আছে।

মেলবোর্নের সি-বি-ডি-তে টনকা কিচেনটি তাদের উন্নতমানের ভারতীয় খাবারের জন্য পরিচিত, যাদের ১৫ জন কর্মীর একটি দল আছে এবং তাদের অর্ধেকেরও বেশি ভিসাধারী।

কিন্তু এই পেশায় বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ায় অনেক কর্মী প্রয়োজন, গত বছরের মার্চে সীমান্ত বন্ধ হওয়ার পর থেকে অভিবাসনের অভাবে দক্ষ কর্মীদের দীর্ঘস্থায়ী অভাব দেখা দিয়েছে।

টনকা'র অন্যতম মালিক, অ্যাডাম ডি'সিলভা বলেন, দক্ষ কর্মী তার ব্যবসার মেরুদণ্ড।
2021 Census Poster
2021 Census Poster Source: ABS
ডেমোগ্রাফাররা বলছেন যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে অস্ট্রেলিয়া এর আগে কখনো চলতি মাইগ্রেশনের মাত্রা নেট জিরো হতে দেখেনি।

মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেমোগ্রাফার ড. থমাস উইলসন বলেন, "অর্থনৈতিক মন্দার কারণে নব্বই দশকেও অভিবাসন কমে গিয়েছিলো, কিন্তু তারপরেও অভিবাসনে প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। কিন্তু এখন এটি অস্ট্রেলিয়ার জন্য খুবই অস্বাভাবিক ঘটনা। দেশটি অভিবাসনের ওপর নির্ভর করে গড়ে উঠেছে। আমাদের এক সময় বছর প্রতি দুই থেকে তিন লাখের মত অভিবাসন হতো।"

কিন্তু অস্ট্রেলিয়া আগের বছরের তুলনায় পরিসংখ্যানগতভাবে কম বৈচিত্র্যময় হতে পারে, তবে ড. উইলসন বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য হুমকির মুখে নেই।

তিনি বলেন, "আমরা সম্ভবত আগামী কয়েক বছরের জন্য বিদেশে জন্মগ্রহণকারীদের অনুপাতে কিছুটা তারতম্য পেতে যাচ্ছি, কিন্তু বিদেশ থেকে অভিবাসন পুনরায় শুরু হলে সেটি আবার ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অস্ট্রেলিয়ার জনসংখ্যা বৃদ্ধি এখন এক শতকের সর্বনিম্ন।

গ্যাব্রিয়েলা ডি'সুজা বলেছেন অস্ট্রেলিয়ায় এই বছরে নেট ওভারসীজ মাইগ্রেশন হবে লক্ষমাত্রার চেয়ে ৭২,০০০ কম।

তিনি বলেন, গত জুলাইয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ০.৬ ধরা হয়েছিল, এখন আগামী বাজেট আপডেটে এটি কমে ০.১ হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, যদিও অস্ট্রেলিয়ার নেট জিরো মাইগ্রেশনের প্রভাব ইতিমধ্যেই মূল সেক্টরগুলিতে অনুভূত হচ্ছে, তবে এটি প্রকৃতপক্ষে মূল সংকটের একটি ছোট ইঙ্গিত হতে পারে।

বৈশ্বিক মহামারীতে জাতীয় আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হওয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়।

স্প্যানিশ ফ্লু সংকট থেকে মুক্ত হওয়ার সময়েও দেশে একটি জরিপ করা হয়েছিল।

কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই বছরের আদমশুমারি থেকে সংগৃহীত ফলাফল অভিবাসনের ধরন পরিবর্তন এবং বর্তমান জনসংখ্যার একটি চিত্র পেতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তারা প্রত্যেককে এই শুমারিতে অংশ নিতে এবং ভবিষ্যৎ ফলাফলে তাদের সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে আহবান জানিয়েছেন।

আসন্ন ২০২১ সালের সেনসাসের তাৎপর্য নিয়ে করা বাংলায় প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন। 

Follow SBS Bangla on .

আরও দেখুন:

Share