সিডনিতে মিজলজ এলার্ট জারি করা হয়েছে

Measles Virus

The measles virus, paramyxoviridae from the Morbillivirus family, transmission microscopy view. Source: Universal Images Group Editorial

সম্প্রতি অতি সংক্রামক ব্যাধি হামে আক্রান্ত হয়েছেন এক ব্যক্তি। এর পর সিডনিতে মিজলজ এলার্ট জারি করা হয়েছে। সিডনি লোকাল হেলথ বলছে, এই ঘটনার ফলে সবাই সতর্ক হবেন বলে তারা আশা করছে। সবার যাচাই করে দেখা উচিত যে, তারা হাম থেকে সুরক্ষিত আছেন কিনা।


নিউ সাউথ ওয়েলস হেলথ অথরিটিজ বলছে, যে লোকটি হামে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন, তার বয়স ছিল ২০ এর কোটায়। তিনি যখন হামে আক্রান্ত হয়েছিলেন, তখন তিনি সিডনির ইনার ওয়েস্ট, নর্থওয়েস্ট এবং ইস্টার্ন সাবার্বগুলোতে গিয়েছিলেন।

অসুস্থ্য হওয়ার অব্যবহিত আগে তিনি বিদেশ ভ্রমণ করেন নি এবং এর আগে মিজলজ কেসের সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা জানা যায় নি।

সিডনির দক্ষিণ উপকূল ওলংগং থেকে গত ডিসেম্বরে তিনি সেন্ট্রাল সিডনিতে আসেন এবং ইনার ওয়েস্ট ও বন্ডাই বিচে ভ্রমণ করেন।

হামের বিভিন্ন লক্ষণ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে জনগণকে পরামর্শ দেন সিডনি লোকাল হেলথ ডিস্ট্রিক্টের ড. লিনা গুপ্ত।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, আক্রান্ত ব্যক্তির নাক, মুখ কিংবা গলা থেকে নির্গত শ্লেষার মাধ্যমে হাম পরিবাহিত হয়। সংক্রমণ ঘটার ১০ থেকে ১২ দিন পর সাধারণত হামের লক্ষণগুলো দেখা দেয়।

২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়া জুড়ে বেশ কয়েকটি হামের ঘটনার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। অস্ট্রেলিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ড. টনি বার্টন হামের এই প্রাদূর্ভাবকে আশঙ্কাজনক বলে মনে করেন।

নিরাপদ ও কার্যকর প্রতিষেধক থাকা সত্ত্বেও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে হামে আক্রান্ত হয়ে লাখ লাখ লোক মৃত্যুবরণ করে। এদের বেশিরভাগই মূলত কমবয়সী শিশু।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা W-H-O বলছে, বিশ্ব জুড়ে হামে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। ২০০০ সালে এই সংখ্যা ছিল ৫৫০,১০০ আর ২০১৮ সালে তা নেমে আসে ১৪০,০০০ এ। মূলত টিকা প্রদানের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় এ সংখ্যা হ্রাস পায়।

এই সুসংবাদ সত্ত্বেও ২০১৬ সাল থেকে রিপোর্ট হওয়া কেসের সংখ্যা ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১১২টি কেসের রিপোর্ট করা হয়েছে। নিউ ইয়র্ক রাজ্যের সাম্প্রতিককালের ইতিহাসে এ রকম সংক্রমণের ঘটনা আগে আর কখনও দেখা যায় নি। আর ইওরোপে ২০১৮ সালে প্রায় ৬০,০০০ হামে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা জানা গেছে। এই সংখ্যা ২০১৭ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি এবং এই শতকের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ডি. লিনা গুপ্ত বলেন প্রতিষেধক প্রদানের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, যারা ১৯৬৬ সালের পর জন্মগ্রহণ করেছেন তাদের জন্য।

২০১৯ সালে বিশেষজ্ঞরা বলেন, মিজলজ ভাইরাসের জন্য প্রায় ৯৫ শতাংশ ব্যক্তির প্রতিষেধক গ্রহণ করা দরকার। অস্ট্রেলিয়ার বেশিরভাগ অংশেই তা করা হয়েছে।

কিন্তু, এমন এলাকাও আছে যেখানে ৯৫ শতাংশ ব্যক্তিকে টিকা প্রদান করা হয় নি। এই হার ৮৫ শতাংশের কাছাকাছি। সেসব এলাকায় হামের প্রাদূর্ভাব দীর্ঘ সময় ধরে চলতে পারে।

হামের কুফল প্রতিরোধ করা কিংবা ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য কয়েক দশক ধরে সম্পাদিত কাজ বিনষ্ট করার জন্য একটি টিকা-বিরোধী আন্দোলনের হুমকি সম্পর্কে এর আগে সতর্ক করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। 
টিকা-বিরোধী সমর্থক গোষ্ঠীগুলো দাবি করে যে, টিকার সঙ্গে বিভিন্ন নিউরে-ডেভেলপমেন্টাল ডিজওর্ডারের যোগসূত্র রয়েছে। যেমন, অটিজম। শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা গবেষণার মাধ্যমে এই দাবির খণ্ডন করেছেন।

Monash Institute of Cognitive and Clinical Neurosciences এর Dr Hannah Kirk এসবিএস-কে বলেন, টিকা-বিরোধী বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে ভয়ানক ভূমিকা রেখেছে সামাজিক-যোগাযোগ-মাধ্যম।

ড. গুপ্ত বলেন, সিডনির সাম্প্রতিক কেসটি জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে পারে যে, তাদের ভ্যাকসিনেশন স্ট্যাটাস চেক করে দেখতে হবে।

 

আরও তথ্যের জন্য দেখুন: health.nsw.gov.au/measles

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share