অস্ট্রেলিয়ায় পোষা প্রাণী সংগ্রহ ও প্রতিপালনের উপায়

Giving animals a second chance

Giving animals a second chance is a rewarding experience. Source: Getty Images/Group4 Studio

RSPCA-সহ এ ধরনের আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে কোনও প্রাণীকে বাড়িতে নিয়ে প্রতিপালনের মাধ্যমে আপনি যে শুধু সেই প্রাণীটির সাহচর্য পাচ্ছেন তা-ই নয়, সেই সাথে প্রাণীটিকে বেঁচে থাকার জন্যে আপনি দ্বিতীয়বারের মত সুযোগও করে দিচ্ছেন।


অস্ট্রেলিয়ায় পোষা প্রাণীর মালিকানার হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। এখানে প্রায় ৬১ শতাংশ পরিবার কমপক্ষে একটি পোষা প্রাণীর মালিক।

তারপরেও প্রতি বছর হাজারেরও বেশি বিপন্ন পোষা প্রাণীকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়।  

এরকম আশ্রয়কেন্দ্রগুলো থেকে কোনও প্রাণীকে বাড়িতে নিয়ে প্রতিপালনের মাধ্যমে আপনি যে শুধু সেই প্রাণীটির সাহচর্য পাচ্ছেন তা-ই নয়, সেই সাথে প্রাণীটিকে বেঁচে থাকার জন্যে আপনি দ্বিতীয়বারের মত সুযোগও  করে দিচ্ছেন।
Animal shelter
Animals in the shelter are looking for routine and stability. Source: Getty Images/Capuski
রয়াল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশান অব ক্রুয়েলটি টু এনিমেলস (যেটি RSPCA নামে বেশি পরিচিত) সংগঠনের কীরান ওয়াটসন বলেন, প্রতি বছর কেবলমাত্র নিউ সাউথ ওয়েলসের আশ্রয়কেন্দ্রেই প্রায় ত্রিশ হাজার প্রাণীকে জায়গা দিতে হয়। এর মধ্যে বিড়ালের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি, প্রায় পনের হাজার এবং তারপরেই কুকুরের অবস্থান, প্রায় দশ হাজার।

অন্যান্য প্রাণীদের মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, শূকর, এবং মোরগের মত গৃহপালিত পশুপাখি। আর সেই সাথে রয়েছে  খরগোশ, অন্যান্য পাখি এবং মাছ।

বেশিরভাগ উদ্ধারকারী প্রতিষ্ঠানের মতই RSPCA-তে উদ্ধারকৃত প্রাণীর শারিরীক ও আচরণগত মূল্যায়ন করে নেওয়া এবং টীকা দেওয়া হয়। অতঃপর তাদের শরীরে মাইক্রোচিপ প্রবেশ করানোর পরে স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে সেগুলোকে নতুন মালিকানায় পাঠানোর জন্যে তালিকাভূক্ত করা হয়।  

RSPCA-র কাছ থেকে কোনও প্রাণীকে বাড়ি নিয়ে যেতে চাইলে তাদের Adopt A Pet ওয়েবসাইটে খোঁজ নিতে হবে। অথবা সরাসরি নিকটস্থ RSPCA আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও চলবে।
Adopting pets can be a rewarding experience
Adopting pets can be a rewarding experience. Source: Getty Images/eclipse_images
পোষা প্রাণী হিসেবে গ্রহণের প্রক্রিয়ার শুরুতেই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মী আপনাকে প্রাণীটি সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করবে। এবং নিশ্চিত করবে এটি আপনার পরিবার ও জীবনযাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

আপনি চাইলে স্থানীয় অন্য যে কোনও উদ্ধারকেন্দ্র থেকেও পোষা প্রাণী সংগ্রহ করতে পারেন।

ক্যারি মিচেল বহু বছর ধরেই হারানো বিড়াল উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজে জড়িত রয়েছেন।

চার বছর আগে একটি মা-বিড়াল ও তার ছানাকে স্থানীয় একটি উদ্ধারকেন্দ্রের মাধ্যমে তিনি নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন।        

যে বিড়ালগুলো তাদের জীবনের পুরোটা না হলেও বেশিরভাগ সময়ই রাস্তায় কাটিয়েছে, সেগুলোকে পোষ মানাবার কাজ বেশ কঠিন।   

মা বিড়ালটি ক্যারির কোলে স্বাচ্ছন্দে বসার মত সহজ হতে প্রায় দেড় বছর সময় নিয়েছিল। কিন্তু এতসব প্রতিকূলতার পরেও এরকম বিড়ালগুলিকে পোষা প্রাণী হিসেবে গ্রহণ করতে পারাটা মনে গভীর আনন্দ নিয়ে আসে।
Foster care programs give temporary homes for animals before they go into adoption
Foster care programs give temporary homes for animals before they go into adoption. Source: Getty Images/yara duvdevan
কোনও প্রাণীকে লালন-পালনের জন্যে বাড়িতে নিয়ে আসাটা একটি দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা। দীর্ঘ মেয়াদে এখানে দায়বদ্ধ হয়ে থাকতে হয়। কারণ এই দায়িত্ব পালন করে যেতে হয় প্রাণীটি যতদিন বেঁচে থাকে ততদিনই।  

আপনি যদি পোষা প্রাণীর সাহচর্য পেতে চান, কিন্তু একই সাথে আর্থিক সমস্যা বা অন্যান্য দায়িত্বের কারণে দীর্ঘ মেয়াদে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে থাকাটা যদি সহজ না হয়, সে ক্ষেত্রে ফস্টার কেয়ার আপনার জন্যে একটি ভাল সমাধান হতে পারে।

আরও অনেক প্রতিষ্ঠানের মতই সিডনি ডগস এন্ড ক্যাটস হোম হারিয়ে যাওয়া অথবা রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো মালিকানাবিহীন বিড়ালের জন্যে ফস্টার কেয়ার প্রকল্প পরিচালনা করছে।  

যে কেউই আগ্রহী হলে একজন ফস্টার কেয়ারার হতে পারেন।

আলাদা করে নির্দিষ্ট কোনও যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। তবে আগ্রহী মানুষটি পরিচর্যাকারী হওয়ার উপযুক্ত কিনা সেটি যাচাই করে দেখা হয়। আর তাঁর জীবনযাত্রার সঙ্গে মানানসই একটি প্রাণী যত্নের সাথে খুঁজে দেয়া হয়।.

মনিকা লো ক্যাসিও ফস্টার কেয়ারার হিসেবে কয়েক সপ্তাহ পরপরই একটি করে নতুন পূর্ণবয়সী অথবা বাচ্চা কুকুরকে গ্রহণ করেন। পোষা প্রাণীর সাহচর্যের সাথে সাথে ভ্রমণের সুযোগ খোলা রাখাটাও তাঁর পছন্দ।

তাঁর ভূমিকা হল পোষা প্রাণীগুলোকে অনুশীলনের মাধ্যমে আদবকায়দা শেখানো যেন সেগুলো নিজেদের জন্যে চিরস্থায়ী কোনও বাড়ি খুঁজে নিতে পারে।
Owning a pet is a lifetime commitment.
Owning a pet is a lifetime commitment. Source: Getty Images/Peter M. Fisher
প্রথমবারের মত আপনি যখন কোনও পোষা প্রাণীকে নিজের বাড়িতে স্বাগত জানাবেন, তখন তাদের সৌন্দর্যে আপনি বিমুগ্ধ হয়ে যেতে পারেন। বিশেষ করে সেটি যদি কমবয়সী ছোট্ট কোনও প্রাণী হয়।

একদিন যে এই প্রাণীটি কোনওভাবে গুরুতর আহত বা অসুস্থ হতে পারে, এটি কল্পনা করাও সম্ভবত আপনার জন্যে কঠিন হবে।   

হানাকো ওগাওয়া সিডনির নর্থ শোর-এর একজন জরুরি ও আপৎকালীন পশুচিকিৎসক।

ডাক্তার ওগাওয়া বলেছেন, তিনি অনেক দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা দেখেছেন যেখানে চিকিৎসার খরচ বহন করতে না পারায় পোষা প্রাণীটিকে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে নিধন করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।

আপনার পরিবারে কোনও পোষা প্রাণীকে যদি স্বাগত জানাতে চান, তাহলে আশ্রয়ের জন্যে একটি শান্তিপূর্ণ  বাড়ি খুঁজছে, এমন কোনও প্রাণীকে গ্রহণ করার কথা আপনি বিবেচনা করে দেখতে পারেন।


মূল প্রতিবেদনটি পড়ুন

Follow SBS Bangla on .

এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট  করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন 




Share