ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুক হামলার দু’বছর: অস্ট্রেলিয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়ের শঙ্কা কাটে নি

Two tourists of Christchurch stand opposite the Al Noor Mosque, they said they were shocked to hear someone had mad terror threats to be carried out there.

Tourists look at Al Noor Mosque in Christchurch, New Zealand. Source: AAP Image/Adam Bradley / SOPA Images/Sipa USA

১৫ মার্চ নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার দু’বছর পূর্ণ হলো। ২০১৯ সালের সেই সন্ত্রাসী ঘটনায় ৫ জন বাংলাদেশী-সহ ৫১ জন নিহত হন এবং ৪৯ জন আহত হন। এই মর্মান্তিক ঘটনার দু’বছর পূর্তি উপলক্ষে এবং অস্ট্রেলিয়ায় এর প্রভাব নিয়ে এসবিএস বাংলার সঙ্গে কথা বলেছেন মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির গবেষক মোল্লা মোহাম্মদ রাশিদুল হক।


গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো

  • ১৫ মার্চ ২০১৯ নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে বন্দুক হামলায় ৫১ জন নিহত হন।
  • অভিযুক্ত অস্ট্রেলীয় ব্রেন্টন টারান্টের বিনা-প্যারোলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।

মোল্লা হক বলেন, “একজন অস্ট্রেলিয়ান যদি নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে ঘটনাটা ঘটাতে পারে, সে রকম রাইট উইং আরও একজন বা দু’জন অস্ট্রেলিয়ান এ ঘটনা অস্ট্রেলিয়াতেও ঘটাতে পারে।”
মোল্লা হক বলেন, “একজন অস্ট্রেলিয়ান যদি নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে ঘটনাটা ঘটাতে পারে, সে রকম রাইট উইং আরও একজন বা দু’জন অস্ট্রেলিয়ান এ ঘটনা অস্ট্রেলিয়াতেও ঘটাতে পারে।” Source: Molla Huq
ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে বন্দুক হামলার ঘটনা প্রভাব অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপরে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন মোল্লা মোহাম্মদ রাশিদুল হক। তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়ার মুসলিম সম্প্রদায়ের অনেকেই একটু ভয়ে থাকেন, অস্ট্রেলিয়ায় এ ধরনের ঘটনার যেন কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

তিনি বলেন,

“হ্যাঁ, ব্যাপক প্রভাব আমাদের জীবনে আছে। মুসলমানরা এখন অনেকেই মসজিদে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছে। আর, যারা যান, তারা খুব ভয়ে থাকেন, কবে না কবে আবার এ রকম একটা অ্যাটাক অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হয়।”
মেলবোর্নের আলফ্রেড হসপিটাল মুসল্লায় (নামাজ সেন্টারে) জুম্মার খুৎবা দিয়ে থাকেন মোল্লা মোহাম্মদ রাশিদুল হক। বিগত প্রায় ২৪ বছর ধরে তিনি তবলীগি জামা’তের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। ইতোমধ্যে তিন চিল্লা (তবলীগি জামা’ত অনুসৃত এক ধরনের ধর্মীয় অনুশীলন ও কার্যক্রম) দিয়েছেন তিনি। তার স্ত্রীও কুরআনে হাফেজা।
Ardern is here to unveil a memorial plaque in memory of the victims of the March 15, 2019, Christchurch terror attack.
New Zealand Prime Minister Jacinda Ardern, right, arrives at the Al Noor mosque in Christchurch, New Zealand, Thursday, Sept. 24, 2020. Source: AAP Image/AP Photo/Mark Baker
মোল্লা মোহাম্মদ রাশিদুল হক বলেন,

“নিউ জিল্যান্ডে যিনি এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তিনি একজন অস্ট্রেলিয়ান।”

“একজন অস্ট্রেলিয়ান যদি নিউ জিল্যান্ডে গিয়ে ঘটনাটা ঘটাতে পারে, সে রকম রাইট উইং আরও একজন বা দু’জন অস্ট্রেলিয়ান এ ঘটনা অস্ট্রেলিয়াতেও ঘটাতে পারে।”
তার মতে,

“নিউ জিল্যান্ডের সেই ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ায় মসজিদগুলোতে প্রহরার ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু, এখন আর সেটা দেখা যাচ্ছে না।”

তিনি আশঙ্কা করেন যে, “কিন্তু সেটাই একটা সুযোগ হয়ে দাঁড়াতে পারে, রাইট-উইং এক্সট্রিমিস্টদের জন্য। তারা কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার যে-কোনো মসজিদে একই ঘটনা ঘটাতে পারে। এবং সেজন্যই কিন্তু অনেকে শঙ্কিত। এখানকার মুসলিম নেতৃবৃন্দের অনেকেই ব্যাপারটা নিয়ে শঙ্কিত যে, এ রকম কোনো ঘটনা না আবার কোনো দিন ঘটে যায়।”
Taj Mohammad Kamran and Bader Dokhan outside the courts display writings with a big red heart drawing after the sentencing on the Christchurch Mosque attacker.
People outside the courts after the sentencing of the Christchurch attacker. Source: AAP Image/Adam Bradley / SOPA Images/Sipa USA
তবে, অস্ট্রেলিয়া সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রতি তিনি আস্থা রাখেন বলে জানান। তার মতে, ইতিবাচক দিক হলো,

“আমরা অস্ট্রেলিয়ান সরকার, অ্যাসিও (ASIO), অস্ট্রেলিয়ার যে কাউন্টার টেররিজম পুলিশ আছে, তাদের ওপর আমরা আস্থা রাখি।”

“আমরা আশা করছি যে, এ রকম কোনো রাইট-উইং গ্রুপ যদি সে-রকম কোনো কিছু করার চেষ্টা করে, সেটা তারা প্রতিহত করবেন।”

মেলবোর্নের মনাশ ইউনিভার্সিটিতে পার্ট-টাইম সেশনাল লেকচারার মোল্লা হক মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির ডিপার্টমেন্ট অফ মেডিসিনে রিসার্চ ফেলো হিসেবেও কাজ করছেন।

মোল্লা মোহাম্মদ রাশিদুল হকের সাক্ষাৎকারটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share