এই অর্থবছরে অস্ট্রেলিয়ান ভিসায় যে-সব পরিবর্তন আসছে

A factory worker pours molten iron at Backwell IXL in Geelong in Geelong, Wednesday, April 30, 2014. (AAP Image/Julian Smith) NO ARCHIVING

A factory worker pours molten iron at Backwell IXL in Geelong in Geelong, Wednesday, April 30, 2014. Source: AAP Image/Julian Smith

১ জুলাই থেকে অস্ট্রেলিয়ান ভিসাগুলোতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারীর কারণে কয়েকটি ভিসা ক্লাসে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পরিবর্তন আসছে।


অস্ট্রেলিয়ায় কিছু কিছু ভিসায় ১ জুলাই থেকে আনীত পরিবর্তনের ফলে দক্ষ কর্মীদের জন্য স্থায়ী অভিবাসন লাভের পথ সুগম হবে, ওয়ার্কিং হলিডে-মেকারদের জন্য আরও বেশি স্থান রাখা হবে এবং কোভিড-১৯ এর কারণে সীমান্ত বন্ধ থাকায় যেসব গ্রাজুয়েটরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারা তাদের ক্ষয়-ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।

ভিসা-এনভয় মাইগ্রেশন এজেন্সির আইনজীবি বেন ওয়াট বলেন, এসব পরিবর্তনের ফলে কেউ কেউ তাদের কোভিড-১৯ এর কারণে যে-সব ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে, সেগুলো কাটিয়ে উঠতে পারবেন।
মিস্টার ওয়াট আরও বলেন, এসব পরিবর্তনগুলোকে কোনো কোনো ভিসাধারীর প্রতি পুরস্কার হিসেব দেখা হচ্ছে, বিশেষত, যারা এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থানের জন্য সংগ্রাম করছেন।

কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনা হচ্ছে?

টেম্পোরারি স্কিল শর্টেজ সাবক্লাস ৪৮২ ভিসাধারীরা সহজেই স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

১ জুলাই থেকে তারা টেম্পোরারি রেসিডেন্স ট্রানজিশন বা টি-আর-টি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। নিয়োগদাতাদের দ্বারা মনোনীত এই দক্ষ কর্মীরা এর ফলে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস ও কাজ করতে পারবেন।

তবে, এই নতুন পাথওয়েটি এখন থেকে মাত্র দু’বছর ধরে ব্যবহার করা যাবে।

ওয়ার্ক ভিসা ল’ইয়ার্স এর লুক এডওয়ার্ডস বলেন, এসব সাময়িক পরিবর্তনের ফলে এসব ভিসাধারীরা আরও সহজেই অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ পাবেন।

এর জন্য উপযুক্ততা লাভ করতে হলে, এদেরকে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ থেকে ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ এর মধ্যে অন্তত ১ বছর থাকতে হবে।

ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স এর একজন মুখপাত্র এসবিএস নিউজকে বলেন, উচ্চ পর্যায়ের দক্ষতা-সম্পন্ন অভিবাসীরা যারা বৈশ্বিক মহামারীর সময়টিতে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করেছেন, তারা ‘বিশেষ ছাড়’ হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারবে, এবং এভাবে একসময়ে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্বও লাভ করতে পারবে।
আরেকটি পরিবর্তন আসছে 457 ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে।

এর মানে হলো, টি-আর-টি স্ট্রিমে স্থায়ী অভিবাসনের জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে তারা আর বয়সের কারণে অনুপযুক্ত বা বাধাগ্রস্ত হবে না।

মিস্টার এডওয়ার্ডস বলেন, যেসব ভিসাধারীর বয়স ৪৫ বছর ও তদূর্ধ্ব, এর আগে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি ভিসার জন্য তাদের পাথওয়ে অনেক সীমিত ছিল কিংবা একেবারে বন্ধই ছিল।

এখন যে পরিবর্তন আনা হচ্ছে, এতে এখন এই অপশন বা সুযোগ গ্রহণের জন্য কোনো বয়স-সীমা নেই। তবে, এই সুযোগ গ্রহণ করা যাবে মাত্র দুই বছর ধরে।

বয়স ছাড়ের এই সুযোগ গ্রহণ করতে হলে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ এবং ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে হবে।

সম্প্রতি গ্রাজুয়েট হওয়াদের জন্যও পরিবর্তন আনা হচ্ছে।

কোভিড-১৯ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে টেম্পোরারি গ্রাজুয়েট ভিসাধারীদের যাদের সময় নষ্ট হয়েছে, তারা একটি রিপ্লেসমেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।

এর জন্য উপযুক্ততা লাভ করতে হলে, তাদেরকে অবশ্যই এই ক্যাটাগোরির একটি বৈধ ভিসাধারী হতে হবে কিংবা এর আগে যদি এই ভিসা ইস্যু করা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে তার মেয়াদ ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ নাগাদ কিংবা তার পরবর্তী সময়ে শেষ হতে হবে।

আর, তাদেরকে অবশ্যই অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থাকতে হবে ১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ এবং ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ এর মধ্যবর্তী সময়টিতে।

এটি ঘোষণার মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে যে, এর মাধ্যমে প্রায় ৩০,০০০ বিদ্যমান ভিসাধারী কিংবা ইতোপূর্বে যারা ভিসাধারী ছিল তারা এত্থেকে উপকৃত হবে।

মিস্টার ওয়াট বলেন, এসব গ্রাজুয়েটদের যে শিক্ষাগত যোগ্যতা রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ার কর্মক্ষেত্রে দ্রুত তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কোভিড-১৯ এর কারণে সীমান্ত বন্ধ রাখার ফলে ওয়ার্কিং হলিডে মেকাররা অস্ট্রেলিয়ায় আসতে পারছিল না। যে-সব শিল্প সাধারণত এদের ওপরে নির্ভর করে থাকে, এতে করে সে-সব শিল্পের ওপরে চাপ বাড়ছিল।

কিন্তু, ১ জুলাই থেকে শুধুমাত্র ২০২২-২৩ অর্থ-বছরের জন্য এক্ষেত্রে ক্যাপ বা সর্বোচ্চ সীমা ৩০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে সে-সব দেশের জন্য, যে দেশগুলোর জন্য 462 ভিসা-ব্যবস্থার অধীনে ওয়ার্কিং হলিডে মেকার্স ভিসার ক্যাপ বা ভিসা ইস্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা নির্ধারিত আছে।

এই নতুন অর্থ-বছরে মঙ্গোলিয়া এবং ব্রাজিলও অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্কিং হলিডে মেকার ভিসা প্রোগ্রামের অন্তর্ভুক্ত হবে। আর, কোনো কোনো দেশের জন্য এক্ষেত্রে বয়স-সীমা ও ভিসা-সংখ্যার ক্যাপেও পরিবর্তন আনা হবে।

এভাবে, ইতালীয় ও ডেনিস নাগরিকদের ক্ষেত্রে বয়স-সীমা ৩০ বছর থেকে আরও ৫ বছর বাড়িয়ে ৩৫ বছর করা হবে।

পুরো প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।


এসবিএস বাংলার অনুষ্ঠান শুনুন রেডিওতে, এসবিএস বাংলা রেডিও অ্যাপ-এ এবং আমাদের ওয়েবসাইটে, প্রতি সোম ও শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত। রেডিও অনুষ্ঠান পরেও শুনতে পারবেন, ভিজিট করুন: 

আমাদেরকে অনুসরণ করুন । 



Share