"ডলারের দাম কমলেও পণ্য রপ্তানীর চাহিদা কম থাকলে অস্ট্রেলিয়া এর সুফল নিতে পারবে না"

Impact of COVID 19 on economy

. Source: SBS

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দার আশংকা করা হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতেও এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই সমস্যা আসলে কতটা গভীর হবে এ চিত্রটি সকলের কাছে যথেষ্ট পরিষ্কার নয়। আন্তর্জাতিক অর্থনীতি-রাজনীতি এবং তার সাথে অস্ট্রেলিয়ার সম্পর্ক কেমন হবে এ বিষয়ে এসবিএস বাংলার সাথে কথা বলেছেন অস্ট্রেলিয়ান ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস-এর লেকচারার ডঃ মামুন আলা।


ডঃ মামুন আলা এসবিএস বাংলায় আপনাকে স্বাগতম
-ধন্যবাদ

প্রথমেই আপনার কাছে জানতে চাই করোনা পরবর্তী আন্তর্জাতিক অর্থনীতির চিত্রটি কেমন হবে এবং এতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে কি প্রভাব পড়বে?
- এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি বিশ্ব অর্থনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ইতিমধ্যে COVID 19-এর প্রভাবে ওয়াল স্ট্রিটসহ বিশ্বের বড়ো বড়ো স্টক মার্কেটগুলোতে দরপতন ঘটেছে, সেই সাথে বেড়েছে বেকারত্ব। ব্যাপকভাবে তেলের দরপতন হয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে থাকার ফলে অনেক দেশ এর সুফল নিতে পারছে না। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ সারা বিশ্ব মন্দার কবলে পড়বে। সেইদিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিও বিশ্ব মন্দার কবলে পড়বে বলে সমূহ সম্ভাবনা আছে।
Mamun Ala
Mamun Ala Source: Supplied
কিছুদিন ধরে অস্ট্রেলিয়ার মুদ্রার মান কমছে, এটা অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিকে কিভাবে প্রভাবিত করবে?
- অস্ট্রেলিয়ার মুদ্রার মান কমার মূল কারণ চীনে COVID 19-এর প্রসার, চীন ও অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি একটি অপরটির ওপর নির্ভরশীল, তবে অস্ট্রেলিয়ার দিক থেকে এটি আরো বেশি। তাই অনেক দেশের আগেই অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতি আক্রান্ত হয়েছে, তার প্রাথমিক লক্ষণ ছিল অস্ট্রেলিয়ান ডলারের দর পতন। তবে এই মুদ্রার মান কমলেও অর্থনীতিবিদরা এর ইতিবাচক দিক আছে বলে মনে করেন, এতে রপ্তানী বাড়ে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া এর সুফল নিতে পারছে না, কারণ COVID 19-এর ফলে পণ্য ও সেবার চাহিদা বিশ্বে ব্যাপকভাবে কমে গেছে। সেইসাথে অস্ট্রেলিয়ার আমদানিকারকদেরও বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে।

করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বিশ্বে রাজনৈতিক ঝুঁকি কেমন হবে?
- ইতিমধ্যে COVID 19-কে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে শীতলযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। সেইসাথে অনেক উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতেও COVID 19-এর প্রভাবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নতুন করে ফিরে আসতে পারে।

করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে অস্ট্রেলিয়ার সাথে চীনের রাজনৈতিক বিতর্ক থেকে বাণিজ্যিক বিতর্কে মোড় নিয়েছে, বিষয়টি কিভাবে দেখেন?
-অস্ট্রেলিয়া তার নিরাপত্তার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে ওপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল, এব্যাপারে অস্ট্রেলিয়া অকপট। অপরদিকে অর্থিনীতিতে অস্ট্রেলিয়া নির্ভর করে চীনের ওপর, বিশেষ করে খনিজ দ্রব্য রপ্তানি, ট্যুরিজম, এবং শিক্ষা খাত। এখন চীন ও যুক্তরাষ্টের শীতলযুদ্ধে অস্ট্রেলিয়াকে প্রায়শই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন দিতে হয়। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া যদি চীনের সাথে এ ধরণের রাজনৈতিক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে, তাতে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে।

সার্বিকভাবে অস্ট্রেলিয়ার অর্থনীতিকে পুনুরুদ্ধার করতে কি কি পদক্ষেপ সরকার নেবে বলে আপনি মনে করেন?
- অস্ট্রেলিয়ার যে কোন অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় COVID 19-এর ইস্যুটি তাদের ভাবনায় থাকতে হবে, পাবলিক হেলথের ভিত্তিটি আরো শক্তিশালী করতে হবে, কারণ COVID 19-এর প্রভাব যদি আবারো বাড়তে থাকে তবে সেই আর্থিক, শিল্পসহ বিভিন্ন সেক্টরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাদের আবার প্রণোদনা দিতে হবে। অর্থনৈতিক পুনঃরুদ্ধারের জন্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে হবে, এটা যে কোন অর্থিনীতির জন্য প্রযোজ্য, বিশেষ করে যারা প্রান্তিক অবস্থানে আছেন।

এসবিএস বাংলাকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
-আপনাকেও ধন্যবাদ।

সাক্ষাৎকারটি ঈষৎ সংক্ষেপিত, পুরো সাক্ষাৎকারটি শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন

আরো পড়ুন:

Share