কোভিড-১৯ এর কারণে বহু ভিসা-আবেদনকারী উদ্বিগ্ন

Couple kissing

Source: Getty Images/Maskot

কোভিড-১৯ এর কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরে ও বাইরে পার্টনার ভিসার প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে বিলম্ব ঘটছে। মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউট অফ অস্ট্রেলিয়ার মতে, গত অর্থবছরে যতগুলো পার্টনার ভিসার আবেদন করা হয়েছে, সেগুলোর মাত্র অর্ধেক সংখ্যক ভিসা মঞ্জুর করা হয়েছে।করোনা-সঙ্কটের সময়ে পার্টনার ভিসা পেতে অনেক বেশি সময় লাগছে, প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও লিংকটিতে ক্লিক করুন।


AHWC ইমিগ্রেশন লইয়ার্স এর প্রিন্সিপাল লইয়ার ও মাইগ্রেশন এজেন্ট ম্যাগি টাফি বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে সাবক্লাস-৩০৯ অফশোর পার্টনার ভিসার প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে অনেক বিলম্ব হচ্ছে। এই ভিসার জন্য আগে অপেক্ষায় থাকার গড় সময় ছিল ১৮ মাস। এখন অনেক বেশি সময় লাগছে।মাইগ্রেশন ইনস্টিটিউট অফ অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ডাইরেক্টর জন হুরিগান বলেন, গত অর্থ-বছরে যতগুলো ভিসার আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে তার দ্বিগুণ সংখ্যক ভিসা-আবেদন এখনও অপেক্ষমান তালিকায় রয়েছে।

করোনাভাইরাসের এই বৈশ্বিক মহামারীর সময়ে তার ক্লায়েন্টরা পার্টনারের সঙ্গে দেখা করার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় কিংবা অন্যান্য দেশে যেতে পারছে না, বলেন টাফি। ভিসা মঞ্জুর করার ক্ষেত্রে অসঙ্গতি এবং অস্বচ্ছতা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর ফলে তার ক্লায়েন্টরা মানসিক চাপে ভুগেন বলে দাবি করেন তিনি।

হুরিগানের মতে, অফশোর পার্টনার ভিসা আবেদনকারীদের জন্য এখনও এদেশে আগমন করা সম্ভব। তারা ভিজিটর ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। অস্ট্রেলিয়ার একজন নাগরিক বা স্থায়ী অভিবাসীর পার্টনার হিসেবে ভ্রমণ করার জন্য অস্ট্রেলিয়ান বর্ডার ফোর্স কমিশনারের কাছ থেকে সেজন্য অনুমতি গ্রহণ করতে হবে।

হুরিগান এবং টাফি উভয়েই বলেন, তারা দেখতে পেয়েছেন কোভিড-১৯ এর সময়টিতে প্রসপেক্টিভ ম্যারিজ ভিসাধারীরা ট্রাভেল একজেম্পশন পাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

যারা ইতোমধ্যে ফিঁয়ান্সে ভিসা পেয়েছেন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর তাদেরকে পুনরায় পুরো আবেদন করতে হবে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টাফি। এর বিপরীতে, হুরিগান অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী।অনশোর পার্টনার ভিসা-আবেদনকারীদের জন্যও এটি সহজ কোনো বিষয় নয়।

পেরুতে জন্ম-নেওয়া লাসিয়ানো এবং তার অস্ট্রেলিয়ান পার্টনার ড্রিউ তাদের পার্টনার ভিসার জন্য আবেদন করেছেন পাঁচ বছরেরও বেশি সময় আগে।ড্রিউয়ের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে লাসিয়ানো তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও ওভারস্টে করেছিলেন। তাদের আবেদন প্রাথমিকভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল এবং পর্যালোচনা করার জন্য অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ আপিল ট্রাইবুনাল বা এএটি-তে পাঠানো হয়েছিল। এরপর এটি ফেডারাল সার্কিট কোর্টে পাঠানো হয় এবং পুনরায় এএটি-তে পাঠানো হয়।এই নিদারুণ পরিস্থিতি সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে ড্রিউ নীল নদে সাঁতার কাটার উপমা দেন।

হুরিগান বলেন, একটি সফল ভিসা-আবেদন মূলত নির্ভর করে আপনি আপনার সম্পর্কটি কীভাবে ডকুমেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন তার উপরে।

টাফির মতে, পার্টনার ভিসা-আবেদন জমা দেওয়ার পরে অন্যান্য ডকুমেন্ট, যেমন, পুলিশ সার্টিফিকেট এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করারও প্রয়োজন হয়।টাফি বলেন, উপযুক্ত সময়ের মধ্যে ডকুমেন্ট সংগ্রহ করা সহজ কাজ নয়। কোভিড-১৯ এর কারণে এখন আরও সমস্যা হচ্ছে। যেমন, দেশের বাইরে থেকে বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করা কঠিন হয়ে গেছে।

ড্রিউ জোরালোভাবে পরামর্শ দেন যে, পার্টনার ভিসা-আবেদনকারীদেরকে শুরু থেকেই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

কোভিড-১৯ এর কারণে বহু ভিসা-আবেদনকারী উদ্বিগ্ন। তবে, লাসিয়ানো কৃতজ্ঞ যে, এই সময়টিতে তিনি ড্রিউয়ের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতে পারছেন এবং কাজ করতে পারছেন।

টাফির মতে, নির্ধারিত প্রসেসিং টাইমের মধ্যে অনুসন্ধান করা হলে ডিপার্টমেন্ট অফ হোম অ্যাফেয়ার্স উত্তর দেয় না।

টাফি এবং হুরিগান উভয়ে পরামর্শ দেন যে, সেই সময়টিতে আপনি যা করতে পারেন তা হলো, সহায়ক প্রমাণাদি জমা দিতে পারেন।


Share