বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বিগ্ন অস্ট্রেলিয়া

Inside the refugee camp in Cox's Bazar

Inside the refugee camp in Cox's Bazar. Source: SBS

সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে গিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সংসদ সদস্যদের একটি দল। সেখানে তারা একটি শরণার্থী শিবিরও পরিদর্শন করেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরটির চারদিক ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া লাগানো হচ্ছে যা কিনা ইতোমধ্যে বিতর্কিত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সংসদ সদস্যদের সেই দলটি তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ, সাময়িকভাবে বসবাসের জন্য নির্মিত এই শিবিরটি এখন আরও বেশি স্থায়িত্ব লাভ করছে। এই শিবিরটিতে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা। আর, মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা এখনও ফলপ্রসূ হয় নি।


বাংলাদেশে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরটি অস্ট্রেলিয়ার এমপি এবং সিনেটরদের সফরকারী দলটিকে ঘুরিয়ে দেখান বাংলাদেশের রিফিউজি রিলিফ অ্যান্ড রিপ্যাট্রিয়েশন কমিশনার। এর মাত্র তিন দিন আগে তিনি এ দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন।

বন্যা-প্রবণ সমুদ্রের তীরবর্তী অঞ্চল কক্স বাজারের শরণার্থী শিবিরে ১.১ মিলিয়ন রোহিঙ্গা গাদাগাদি করে অবস্থান করছে। তাদের ৮০ শতাংশই নারী ও শিশু।

সফরকারী অস্ট্রেলিয়ান সংসদ সদস্যদের দলটিতে রয়েছেন লেবার এমপি Anne Aly. তিনি বলেন, তিনি যে দৃশ্যাবলী দেখেছেন সেগুলো হৃদয়-বিদারক।

দাতব্য প্রতিষ্ঠান সেভ দ্য চিলড্রেন-এর Paul Ronalds বলেন, ভয় এটাই যে, তাদেরকে কেউ স্মরণও করে না।

শ্যাডো হোম অ্যাফেয়ার্স মিনিস্টার Kristina Keneally বলেন, অস্ট্রেলিয়ার অর্থায়নে পরিচালিত সেখানকার শিক্ষা ও স্বাস্থ্য-কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করে এবং সেগুলোর  দৃঢ় ও ইতিবাচক ভূমিকা দেখে তিনি উদ্দীপ্ত হয়েছেন।

সফরকারী দলটিকে একজন মা বলেন , সেনাবাহিনী যখন গুলি বর্ষণ করছিল এবং তাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছিল তখন তিনি কীভাবে রাখাইন স্টেট থেকে পালিয়ে এসেছেন।

তারা বলেন, তাদের জীবনের জন্য তারা বাংলাদেশের প্রতি ঋণী। বাংলাদেশকে তারা এখন তাদের ‘মা’ বলে অভিহিত করেন। তবে তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান, পরিস্থিতি যখন নিরাপদ হবে, শুধুমাত্র তখনই।

নিরাপদ আশ্রয়প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনেক ভাল কাজ হচ্ছে। তবে হতাশাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কারণ, এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক সমাধান অর্জিত হয় নি।

Anne Aly বলেন, বড় শঙ্কার বিষয় হলো, এই মানবিক সমস্যাটি প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত চলতে পারে এবং সাংস্কৃতিক বিপর্যয়ও ডেকে আনতে পারে।

এই ভীতির সঙ্গে আরও যুক্ত হয়েছে এক লাখ বা ১০০ হাজার শরণার্থীকে নিকটবর্তী একটি দ্বীপে পুনর্বাসনের পরিকল্পনার বিষয়টি। আর, এই মেগা ক্যাম্পটির চারপাশে বেড়া লাগানোর কাজ শুরু করছে সেনাবাহিনী।

সেভ দ্য চিলড্রেনের Paul Ronalds বলেন, এর দ্বারা দীর্ঘমেয়াদী উদ্দেশ্য সম্পর্কে প্রশ্ন উঠে।আর, যারা এর ভেতরে রয়েছে তাদের মঙ্গল ও কল্যাণ সম্পর্কেও প্রশ্ন উঠে।

তৃতীয় পক্ষের পুনর্বাসন-সহ পরিপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে আর কোনো বিকল্প খুঁজে পাচ্ছেন না কমিশনার। মাহবুব আলম তালুকদার এসবিএস নিউজকে বলেন, এসব কিছুই নির্ভর করছে মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছার উপর।

Kristina Keneally বলেন, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সাড়ারও প্রয়োজন আছে।

বাংলাদেশে অচিরেই ঝড়-বৃষ্টির মওসুম আসছে। কক্স বাজার সমুদ্র তীরে বাস্তুচ্যুত এই শরণার্থীরা তখন ধৈর্যের পরীক্ষা দেবেন। এর আগে তারা কোনো সহায়তা পাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে না।

Gates Foundation এর অর্থায়নে Australian Regional Leadership Initiative এর অধীনে এসবিএস সম্প্রতি বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছে।

প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে উপরের অডিও প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share