ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২ এর কাউন্টডাউন শুরু, অধিকার কর্মীদের উদ্বেগ

The ceremony to unveil the FIFA World Cup Qatar 2022 Countdown Clock is held in Doha, Qatar on Nov. 21, 2021, one year to the World Cup. It is the first world cup to be held in Mid-East. ( The Yomiuri Shimbun via AP Images )

The FIFA World Cup Qatar 2022 Countdown Clock in Doha. Source: The Yomiuri Shimbun via AP Images

২০২২ সালের পুরুষদের ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের কাউন্টডাউন শুরু হয়েছে গত ২১ নভেম্বরে। স্বাগতিক দেশ কাতারে এর জন্য চলছে প্রস্তুতি। তবে, প্রস্তুতির ক্ষেত্রে অভিবাসী কর্মীদের ব্যবহার করা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।


ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবল উপভোগ করেন কোটি কোটি দর্শক। ২০২২ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কাতারে। আরব বিশ্বে এটাই প্রথম বিশ্বকাপ ফুটবল। স্বাগতিক দেশগুলোর মধ্যে কাতারই হতে যাচ্ছে সবচেয়ে ছোট দেশ।

সবাইকে কাতারে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
তবে, বিশ্বকাপের আসর যতই এগিয়ে আসছে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করছে এ ধরনের বৈশ্বিক আসরের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অলক্ষিত দুর্ভোগ নিয়ে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ অস্ট্রেলিয়ার ডাইরেক্টর এলেনা পিয়ারসন বলেন, কাতারে অভিবাসী কর্মীদের প্রতি আচরণ এক্ষেত্রে উপেক্ষা করা যায় না।

বিশ্বকাপকে সামনে রেখে সাতটি নতুন স্টেডিয়াম নির্মাণ ও অন্যান্য বেশ কিছু প্রকল্পে হাত দিয়েছে কাতার। এগুলো তৈরির জন্য তারা অনেকাংশে অভিবাসী কর্মীদের ওপর নির্ভরশীল।

দেশটির দুই মিলিয়ন কর্মীবাহিনীর মাঝে ৯৫ শতাংশই হলো এ ধরনের কর্মী।

জাতিসংঘের একটি সংস্থা, ইন্টারন্যাশনাল লেবার অর্গানাইজেশন বলছে, কাতারের বিভিন্ন ওয়ার্ক সাইটে শুধুমাত্র ২০২০ সালেই ৫০ জন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে এবং ৫০৬ জন গুরুতরভাবে আহত হয়েছে।

কাতারের লেবার সিস্টেম কাফালা লামে পরিচিত। ২০২০ সাল পর্যন্ত কাতারে নিয়োগকারীদের অনুমতি ছাড়া কর্মীদেরকে চাকরি পরিবর্তনের অনুমতি দেওয়া হতো না।

মিজ পিয়ারসন বলেন, এ ধরনের ব্যবস্থার অনুমোদন করা যায় না।

মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক ফুটবলার ক্রেইগ ফস্টার বলেন, এ ধরনের আচরণ সম্পর্কে খেলোয়াড়দের জানা উচিত।

কিন্তু, কাতার ওয়ার্ল্ডকাপের সিইও নাসের আল-খাতের এসব অভিযোগের সঙ্গে একমত হন নি। তিনি বলেন, তার দেশকে অন্যায়ভাবে বিচার করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে কর্মীদের অধিকার প্রদানের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে কাতার।
LGBTIQ+ অধিকারের বিষয়টিও এই আসরের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

কাতারে সমকামিতা বে-আইনী। তবে, LGBTIQ+ ফ্যানদেরকে এই টুর্নামেন্টে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মিস্টার ইনফান্তিনো।

স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে রেইনবো পতাকা উত্তোলনের অনুমতি থাকবে। আয়োজক কমিটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে, সমকামী দর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

তবে, অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় LGBTIQ+ স্পোর্টিং ক্লাব, সিডনি রেঞ্জার্স সকার ক্লাব বলছে, তাদের বেশিরভাগ সদস্য এতে যোগদানে ইচ্ছুক নন।

এই ক্লাবের সাবেক একজন খেলোয়াড় ও তাদের কমিটির সদস্য ক্রিস হিকস। তিনি মনে করেন না যে, বিশ্বকাপের আসরে কাতার সত্যিই সমকামী ফ্যানদেরকে গ্রহণ করবে।

প্রাইড ইন স্পোর্টিং এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার বো নিউয়েন এসবিএস-কে বলেন, কাতারের মতো দেশ পরিবর্তিত হবে, এটা আশা করাটা বোকামি। একটি দেশে যেখানে যৌনতা নিয়ে জঘন্য আইনসমূহ রয়েছে, তারা কীভাবে বিশ্বকাপের মতো একটি আসরের আয়োজন করে, এ নিয়ে বিশ্বে প্রশ্ন উঠা উচিত।

এসব বিষয়ের প্রতি যেসব দল দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, তাদের মধ্যে জার্মেনি অন্যতম। বাছাই পর্বে তারা “হিউম্যান রাইটস” লেখা ইউনিফর্ম পরিধান করেছিল।

এদিকে, ডেনমার্ক বলছে, এই আসরের জন্য তাদের ট্রেইনিং কিটে কাতারের জন্য সমালোচনামূলক বার্তা থাকবে।

২০২২ সালের ২১ নভেম্বর এই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এটি অনুষ্ঠিত হবে ৬০,০০০ দর্শকের ধারণ-ক্ষমতা-সম্পন্ন আল-বাইত স্টেডিয়ামে।

১২ টি দেশ ইতোমধ্যে কাতারের টিকেট বুক করেছে। আরও অনেক দেশ তাদের অনুসরণে এগিয়ে আসছে।

বাছাইপর্বের খেলাগুলো শেষ হলে অন্যান্য দেশগুলো তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারবে।

প্রতিবেদনটি শুনতে উপরের অডিও-প্লেয়ারটিতে ক্লিক করুন।

Follow SBS Bangla on .

Share