ভিক্টোরিয়ার অ্যান্টি-ভিলিফিকেশন বা বিদ্বেষ-বিরোধী সংসদীয় তদন্তের প্রতিবেদনে যা দেখা যাচ্ছে

8eabff27-9342-4f0f-afef-87f08f5b16bb_1615281598.jpeg

Source: Getty

অ্যান্টি-ভিলিফিকেশন না বিদ্বেষ-রোধী সংসদীয় তদন্তের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে যে ভিক্টোরিয়ায় কুসংস্কার এবং ঘৃণা বাড়ছে এবং এই তদন্তে সুপারিশ করা হয়েছে প্রচলিত আইনগুলোকে যাতে আরো সংস্কার করা হয়।


অ্যান্টি-ভিলিফিকেশন সংসদীয় তদন্তের প্রতিবেদনে প্রকাশ্যে নাৎসি প্রতীক দেখানোর নিষেধাজ্ঞার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং এটি ভিক্টোরিয়ার এশীয় ও ইহুদি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে হুমকি বাড়ছে বলে  বক্তব্য তুলে ধরেছে।

ভিলিফিকেশন বা বিদ্বেষ এমন শব্দ বা কাজ যা ঘৃণা ও মারাত্মক হেনস্তা উস্কে দেয়, তবে এই বিষয়টির তদন্তে দেখা যায় যে জনগণ ভিক্টোরিয়ার এই আইনগুলি সম্পর্কে পুরোপুরি সচেতন নয়।

অ্যান্টি-ভিলিফিকেশন তদন্ত প্রতিবেদনে ৩৬টি সুপারিশ করা হয়েছে, যার মধ্যে আছে প্রকাশ্যে নাৎসি প্রতীক প্রদর্শন বন্ধ।

এই তদন্ত কমিটি ইহুদি, ইসলামী এবং ক্যাথলিক গোষ্ঠীগুলোর কথা শুনেছে। মহামারী চলাকালীন এই তদন্তের চেয়ার নাটালি সুলেমান বলেন, "স্পষ্টতই অনলাইনে সত্যিকারের বিষাক্ত ও ঘৃণ্য বক্তব্য প্রচার বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষত ইহুদি ও মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে।"

তিনি স্বীকার করেছেন যে বর্তমান সিস্টেমটি কাজ করছে না এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের এবং এলজিবিটিকিউআই সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য আইনগুলো উন্নত  হওয়া দরকার। 

ইকোয়াল অপর্চুনিটি এবং ভিক্টোরিয়ার মানবাধিকার কমিশনার, ক্রিস্টেন হিল্টন প্রাপ্ত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে করেন, এ ক্ষেত্রে গুরুতর সংস্কার এবং শিক্ষামূলক প্রচারের প্রয়োজনীয়তা আছে।

তিনি বলেন আইনের আওতায় মানুষের অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা তাদের সুবিধাপ্রাপ্তিতে উন্নতি ঘটাবে।

অস্ট্রেলিয়ার ইসলামিক সম্পর্ক বিষয়ক ফোরামের কুরান্ডা সেয়িতও শ্বেত আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীর পুনরুত্থান নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, "ক্রাইস্ট চার্চে আমরা এ জাতীয় বর্ণ বিদ্বেষের প্রকাশ দেখেছি। এর ফলে কী হতে পারে তা আমরা দেখেছি এবং আমি মনে করি যে আমাদের সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে এবং অস্ট্রেলিয়াযর সামাজিক অন্তর্ভুক্তি রক্ষা করতে হবে।"

মিঃ সেয়িত বলেন, এ ধরণের আক্রমনের বিরুদ্ধে বড় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বর্ণবাদী ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতা আইনটি আপডেট করা দরকার।

তিনি যুক্তি দেখান যে অল্প সংখ্যক অভিযোগ পাওয়া এবং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে মনে হয়েছে যে আইনটিতে স্পষ্ট সমস্যা রয়েছে।

আশা করা হচ্ছে আইনী পরিবর্তন হলে উস্কানিমূলক অভিযোগগুলো প্রমান করা সহজ করবে।

মিঃ সেয়িত অনলাইনে ছদ্মবেশী লোকেরা ঘৃণা ছড়িয়ে বা ট্রল করে যে সব বার্তা দিচ্ছে তার বিরুদ্ধে আরো মামলা চান।

তদন্ত কমিটির চেয়ার, নাটালি সুলেমান বলেছেন যে বিগত দুই দশক ধরে বর্তমান অ্যান্টি-ভিলিফিকেশন আইনের অধীনে কেবলমাত্র দুটি মামলা হয়েছে।

তবে তদন্তে সরকারের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তিনি এখনই কিছু বলতে চান না।

তিনি বলেন, "আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছি যা কার্যকরভাবে আইন তৈরি করবে এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এটি ভিক্টোরিয়ান কমিউনিটিকে সুরক্ষা দেবে, এবং এটি সামাজিক সংহতি সৃষ্টি করবে।"

প্রিমিয়ার ড্যানিয়েল অ্যান্ড্রুজ বলেছেন যে রিপোর্টটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ, তবে তিনি নাৎসি পতাকা জনসমক্ষে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু  ভাবেননি।

তবে তিনি এর আগে বলেছিলেন যে নাৎসি প্রতীক গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি বলেন, "এন্টি সেমিটিক আচরণ সম্পর্কে আমার মতামত খুব সুবিদিত I আমি আবার এই বিষয়গুলি তুলব নাI আমি মনে করি মানুষ জানে যে এই বিষয়ে আমার অবস্থান কি। আমি প্রতিবেদনটি দেখতে চাই।" 

মিজ হিল্টন বলেছেন, প্রস্তাবিত সংস্কারের ফলে শিক্ষার্থীদের হলোকাস্ট সম্পর্কে জানাতে নাৎসি প্রতীকগুলি শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার করা হবে, কিন্তু তিনি বলেন যে কমিউনিটি প্রত্যাশা করে যে এর কোনও অপরাধমূলক ব্যবহার হলে আইন প্রয়োগ করা হবে। 

তিনি বলেন, "তবে আমি মনে করি এটি খুব ভালভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে যে নাৎসি প্রতীকগুলি অত্যন্ত আপত্তিকর এবং ঘৃণ্য এবং বিপুল পরিমাণ ক্ষতির কারণ হতে পারে।" 

ভিক্টোরিয়া সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে এই প্রতিবেদন বিষয়ে সাড়া দিতে প্রায় ছয় মাস সময় পাবে। 

পুরো প্রতিবেদনটি বাংলায় শুনতে ওপরের অডিও প্লেয়ারে ক্লিক করুন 

আরো দেখুনঃ

Share